Saturday, April 27, 2013

একজন মোল্লা, একজন ধর্ষক আর একজন মানবাধিকারকর্মীর গল্প

Leave a Comment


প্রতিদিনের মত আজও মানবাধিকার কর্মী মহাশয়ের
কাজে যেতে ইচ্ছা করছেনা। কিন্তু তা তো যেতেই হবে। ফোনটা হঠাত্
বেজে উঠল।বড় স্যারের সেক্রেটারীর ফোন। কোথায় কোন
দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। বিল্ডিং কলাপস। যত দ্রুত সম্ভব কভার করতে বলেছে।
আজ হরতাল তাই রাস্তা ফাঁকা। বাইক নিয়ে রওনা দিয়ে তাই এক ঘন্টায়ই
ঘটনাস্থলে পৌঁছানো গেল। পৌঁছেই ছবি তোলা শুরু। তারপর ভিডিও করে রিপোর্ট রেকর্ড করা শুরু করল। কোনমতে একাজ সেরে সেই
ভাঙা বিল্ডিংএর ভিতরে গেল। একটু দূরে যেতেই দেখল একটা বডি। জীবিত
না মৃত তা বোঝা যাচ্ছেনা। হঠাত্ সেখান থেকে চাপা শব্দ এল।"পানি",
"পানি"। সে গিয়েই ক্যামেরা নিয়ে প্রশ্ন করা শুরু করে দিল। "ভাই কেমন
লাগছে আপনার?" আপনি কে, বাড়ি কোথায়। ওপাশ থেকে শুধু শব্দ এল, "ভাই,
আমাকে বাঁচান। আমি শুধু বাঁচতে চাই।" হঠাত্ একজন মোল্লা প্রবেশ করল। মানবাধিকারকর্মীর কর্মকান্ড দেখে জিজ্ঞাসা করল, "আপনি কি মানুষ?"
মোল্লা বাইরে গিয়েই কয়েকজন ফায়ার সার্ভিস কর্মীকে ডেকে আনল।
তারা তিনচারজন মিলে সেই লোকটাকে বের করে আনল। পায়ে প্রচন্ড
ড্যামেজ হয়েছে। রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তা দেখে তারা অতিদ্রুত এদের
ক্রচে উঠিয়ে নিয়ে চলল। মানবাধিকারকর্মী তাদের পিছনে কতক্ষন
দৌড়েও কোন কথা আদায় করতে না পেরে রণে ভঙ্গ দিল। শালা মোল্লাটায় পুরো পাইন মেরে দিল।

ওদিকে সেই মোল্লা আহত লোকটাকে নিয়ে হসপিটালে ছুটল। একজন ধর্ষক
তাদের দেখেই এগিয়ে আসল। আহত লোকটাকে একটা বেডে শুইয়ে প্রাথমিক
চিকিত্সা দিল। তবে সে দেখতেই পেল প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। রক্তের
প্রয়োজন। দ্রুত গ্রুপিং করে দেখল এবি নেগেটিভ রক্ত। দেবে কে? হঠাত্
পাশের চেয়ারে থাকা মোল্লা বলে উঠল, আমার গ্রুপ এটা। আমি দেব।
অতিদ্রুত রক্ত দেওয়ার ব্যবস্থা হল। সব ওই ধর্ষকই করল। রক্ত দিয়ে একটু পরে মোল্লা বেরিয়ে আসল। তার সামান্য শ্বাসকষ্ট আর ক্লান্তি হচ্ছিল।
ধর্ষক তাকে বেডে শুয়ে থাকারই পরামর্শ দিল। তবে সে বলল, "না ভাই।
ওখানে আমার ভাইয়েরা আমাকে ডাকছে। আমার যেতে হবে।" আবার সেই
মৃত্যুপুরীতে সে পৌঁছল। হঠাত্ তার চোখে পড়ল সেই মানবাধিকারকর্মীকে।
সে রিপোর্ট করছিল, "হেফাজতের লোকেরা সাদা ফিতা মাথায়
সাম্প্রদায়িক শব্দ বলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে উদ্ধারকার্জে বাধার সৃষ্টি করছে।যন্ত্রপাতি চুরি হওয়ারও সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। আর
ওদিকে ডাক্তারদের গাফিলতির ফলে অনেক আহতের
হাসপাতালে জায়গা হচ্ছেনা।"
মোল্লা মনে মনে বলে,"পৃথিবীটা আমাদের জন্য মনেহয় এরকমই হয়।"

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment