Thursday, June 28, 2012

ফেজারভারিয়া আসমতি

Leave a Comment
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষার্থী সাজিদ আলী হাওলাদার বিরল
প্রজাতির এক ব্যাঙ আবিষ্কার করেছেন।
তার এই আবিষ্কার বাংলাদেশের
প্রাণিবিদ্যা চর্চার ইতিহাসে এক নতুন
অধ্যায়ের সূচনা করেছে এবং প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে নতুন
কোনো প্রাণী আবিষ্কারের রেকর্ড করেন।
শুধু তাই নয়, তার এই আবিষ্কারের
কথা বিশ্বের বিখ্যাত বন্যপ্রাণী বিষয়ক
জার্নাল জুট্যাক্সাতে প্রকাশিত হয়েছে। শুরুর কথা সাজিদ ২০০৪ সালে চট্টগ্রাম
বিশ্ববিদ্যালয়ের
প্রাণিবিদ্যা বিভাগে ভর্তি হন। এরপর
থেকেই ব্যাঙ, পাখি নিয়ে তার গবেষণা শুরু
হয়। তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে দীর্ঘদিন
ধরে ব্যঙের জীবন প্রণালি ও বংশবৃদ্ধি নিয়ে বিস্তারিত
গবেষণা চালান। ব্যাঙ নিয়ে গবেষণা ব্যাঙ নিয়ে গবেষণা করার জন্য
তিনি ব্যাঙের হটস্পট খুঁজতে থাকেন। এ সময়
তিনি ব্যাঙের বংশবৃদ্ধির জন্য হটস্পট
হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম
বিশ্ববিদ্যালয়ের কাটাপাহাড় রাস্তার
দু'পাশ থেকে বিভিন্ন ব্যাঙের নমুনা সংগ্রহ করতে থাকেন। এরমধ্যে ২০০৮
সালে একদিন পেয়ে যান বিরল প্রজাতির
একটি ব্যাঙ। সেসময় তিনি ব্যাঙটিকে তার
ব্যক্তিগত সংরক্ষণাগারে নিয়ে যান। আর
এরপর থেকেই তিনি এটির প্রজাতি ও
প্রকৃতি উদ্ধারের কাজে লেগে যান। কিন্তু সারা বিশ্বে এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত ও
তালিকাভুক্ত সাড়ে ছয়শ' প্রজাতির মধ্যেও
এ ব্যাঙের অস্তিত্ব খুঁজে পাননি তিনি।
তারপর শুরু হয় অন্য ধরনের গবেষণা। এ ব্যাঙের ব্যতিক্রমী ডাক ও বৈশিষ্ট্য
বের করতে তিনি যোগাযোগ করেন বিশ্বের
সেরা সব প্রাণিবিজ্ঞানীদের সঙ্গে।
পতর্ুগাল, ইটালি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য,
জার্মানি, জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন
দেশের বিজ্ঞানীদের সহযোগিতায় ব্যাঙের ডাকের সাউন্ড অ্যানালাইসিস
এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্য পর্যবেক্ষণের
মাধ্যমে নিশ্চিত হন যে, এ ধরনের ব্যাঙের
অস্তিত্ব একমাত্র বাংলাদেশেই
পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে তিনি বিশ্বের
সেরা প্রাণিবিজ্ঞানীদের সম্পাদনায় প্রকাশিত বন্যপ্রাণীর শ্রেণীবিন্যাসের
কাজে নিয়োজিত জার্নাল জুট্যাক্সাতে এ
বিষয়ে একটি প্রবন্ধ পাঠান। ওই
সংবাদপত্র কতর্ৃপক্ষ তার আবিষ্কারের
সত্যাসত্য যাচাইয়ের পর চলতি বছরের ১৯
জানুয়ারি প্রবন্ধটি গ্রহণ করেন। এরপর গত ৯ ফেব্রুয়ারি জুট্যাক্সা'র ২৭৬১
ভলিউমে এটি প্রকাশিত হয়। ব্যাঙটির নামকরণ সাজিদ তার আবিষ্কৃত ব্যাঙের নাম
দিয়েছেন 'ফেজারভারিয়া আসমতি'।
উলেস্নখ্য, তিনি এই নামটি দিয়েছেন
প্রাণিবিদ্যার বিভাগের প্রফেসর আসমতের
নামানুসারে। সাফল্য সাজিদ বিরল প্রজাতির এই
ব্যাঙটি আবিষ্কার করে পরিণত
করে হয়েছেন বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ
প্রাণী আবিষ্কারক হিসেবে।
বাংলাদেশে প্রাপ্ত
বা কেনো বাংলাদেশির উভয়চর, সরীসৃপ বা স্তন্যপায়ী প্রাণী আবিষ্কারের
ঘটনা এটিই প্রথম।
তাছাড়া কোনো সহায়তা ছাড়া একক
ব্যক্তি কতর্ৃক প্রাণী আবিষ্কার ও
আন্তর্জাতিক সংবাদপত্রে লেখা প্রকাশেরও
এটি প্রথম ঘটনা। আমেরিকান মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রি'র কিউরেটর ড.
ড্যারেল ফ্রস্ট ও ড. জন এস অ্যাপলেগার্থ
সাজিদের কৃতিত্বের জন্য তাকে অভিনন্দন
জানিয়েছেন।

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment