Tuesday, July 31, 2012

সুন্দর সমাজ গঠনের পূর্বশর্ত ইনসাফ

Leave a Comment
ইসলাম নিছক কোনো ধর্ম নয়,
বরং এটা একটা পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান।
জীবনের
প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা কিভাবে চলবো সে বিষয়ে পবিত্র
কুরান ও হাদিসে সুস্পষ্ট বিধি-বিধান
আলোচনা করা হয়েছে। তেমনি এই দুনিয়ার জীবনে চলার জন্য অন্যতম একটা বিষয়
হচ্ছে ‘ইনসাফ’ বা ‘ন্যায়বিচার’। ইনসাফ বলতে মূলত যার যা প্রাপ্য
তাকে তা দেওয়া এবং হকের ওপর, সত্যের ওপর
অবিচল থাকাকে বুঝায়। মানুষের
স্বার্থপরতা, হিংসা, বিদ্বেষের মূল উৎপাটন
করতে সমাজে ইনসাফ প্রতিষ্ঠার
কোনো বিকল্প নেই। সে জন্যই পবিত্র কুরানে বেশ কয়েক জায়গায় আল্লাহ সুবহানাহু
ওয়া তায়ালা ইনসাফের ওপর কায়েম
থাকতে বলেছেন। বিভিন্ন সময়ে রাসুলদের
পৃথিবীতে পাঠানোর একটা কারণ ছিল,
মানুষকে ইনসাফ শিক্ষা দেওয়া। আল্লাহ
সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেছেন,
“আমরা নিশ্চয়ই আমাদের রাসুলদের কিছু
সুস্পষ্ট নিদর্শনসহ প্রেরণ করেছি; তাদের সাথে পাঠিয়েছি কিতাব এবং ন্যায়দণ্ড,
যাতে মানুষ ইনসাফের ওপর কায়েম
হতে পারে।’’ (সুরা আল হাদীদ- আয়াত : ২৫) এর থেকে বোঝা যায় আল্লাহর কাছে ইনসাফের
গুরুত্ব কতখানি। সমাজে মানুষ ইনসাফের ওপর
অবিচল না থাকলে সমাজে দেখা দেয়
নানা অনিয়ম, হানাহানি, দুর্নীতি এবং চরম
অশান্তি। কারণ মানুষ যখন ন্যায়
পরায়ণতা থেকে দূরে সরে যায়, তখন তার মনুষত্ব ও বিবেকের বিসর্জন নিজের
অজান্তেই হয়ে যায়। তাই আল্লাহ তায়ালা ব্যক্তিগত চরিত্রেও
ইনসাফের প্রতিফলন ঘটাতে বলেছেন এভাবে,
‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর জন্য সত্য ও
ন্যায়ের ওপর
সাক্ষি হয়ে অবিচলভাবে দণ্ডায়মান থাকো।
কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ তোমাদের যেন ন্যায় আচরণ না করতে তোমাদের প্ররচিত
না করে। ইনসাফ রক্ষা করো, এটিই
হচ্ছে ধর্মভীরুতার নিকটবর্তী।
তোমরা আল্লাহকে ভয় করো; নিশ্চয়ই আল্লাহ
তোমাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সম্পূর্ণ
ওয়াকিফহাল।’ (সুরা মায়িদা- আয়াত: ৮) অর্থাৎ আল্লাহকে ভয় করে হলেও কখনও
কাউকে ঠকানো যাবে না। আল্লাহ সব কিছু
শোনেন, দেখেন এবং জানেন। একান্ত
গোপনে করা কাজ সম্পর্কেও তিনি জানেন।
তাই সর্বদা আল্লাহকে ভয় করলে, ইনসাফের
ওপর থাকাটা অনেক সহজ কাজ। আল্লাহ তায়ালা সুরা নিসার ৫৮ নম্বর
আয়াতে আরো বলেছেন, “আল্লাহ তোমাদের এই
নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তোমরা আমানতসমূহ
তাদের (যথার্থ) মালিকের কাছে সোপর্দ কর;
আর যখন মানুষের মধ্যে তাদের
কোনো ব্যাপারে বিচার ফয়সালা করো, তখন তা ন্যায় ও ইনসাফের ভিত্তিতে করো। আল্লাহ
তোমাদের যা কিছু উপদেশ দেন, তা অতীব
সুন্দর। আল্লাহ পাক সব কিছুই দেখেন
এবং শোনেন।” আমাদের সমাজের যত দুর্নীতি,
স্বজনপ্রীতি রয়েছে, সমাজের মানুষ
ইনসাফের সাথে কাজ করলে তা অনেকাংশেই
দূর হবে। আমাদের সবার
আগে আল্লাহকে খুশি করতে হবে, তাই ইনসাফ
করতে গিয়ে যদি কখনো খুব কাছের মানুষের বিপক্ষে যেতে হয়, তাহলে তাই-ই করতে হবে।
বৈরাগ্যবাদ নয়, বরং সমাজ
জীবনে এভাবে আল্লাহর দেওয়া বিধান
অনুযায়ী চলেই মুসলিমরা ইহকাল
এবং পরকালে সফলকাম হতে পারে, এটাই
তো ইসলামের অন্যতম আলোকিত একটি বৈশিষ্ট্য।

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment